গত বৃহস্পতিবার কোরিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়েছে। এ ঘটনার পর দুই কোরিয়া সীমান্তে বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করেছে। ফলে যেকোনো সময় দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
সীমান্ত এলাকায় পিয়ংইয়ং বিরোধী প্রচারণা বন্ধে দক্ষিণ কোরিয়াকে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়ইটা) পর্যন্ত সময় দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটি জানিয়েছে, এ সময়ের মধ্যে যদি দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তে লাউড স্পিকারে উত্তর কোরিয়াবিরোধী প্রচারণা বন্ধ না করে, তাহলে সিউলকে হামলার মাধ্যমে জবাব দেওয়া হবে।
বে দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, তারা সীমান্তে লাউড স্পিকারে প্রচারণা বন্ধ করবে না। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা ও নিউইয়র্ক টাইমসের ।
গুলিবিনিময় শুরুর জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করে স্থানীয় বাসিন্দা ও নিজ সেনাবাহিনীর মনোবল চাঙা করতে দক্ষিণ কোরিয়া ওই এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছে। তবে এ প্রচারণার তীব্র বিরোধিতা করে আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় আড়াইটার মধ্যে তা বন্ধে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। তা না হলে দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে দেশটি।
শনিবার সকালে উত্তরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘অবস্থা যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে, যা নিয়ন্ত্রণ এখন খুবই কঠিন। উত্তর কোরিয়া শুধু দক্ষিণের উসকানির জবাব দেওয়ার জন্যই নয়, দেশের জনগণ যে ব্যবস্থা পছন্দ করে তার জন্যও সর্বাত্মক যুদ্ধে প্রস্তুত।’
জাতিসংঘে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত অ্যান মিয়ং হুন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া যদি আমাদের আলটিমেটামে সাড়া না দেয়, তাহলে সেখানে সামরিক হামলা অবধারিত এবং তা খুবই জোরালো হবে।’
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উনের ইচ্ছা ও শনিবারের ডেডলাইনকে সামনে রেখে তাদের প্রথম সারির সেনাসদস্যরা পূর্ণ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে সীমান্তে অবস্থান করছে।
তবে উত্তরের হুমকিতে দক্ষিণ কোরিয়া বিচলিত নয় বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। শনিবার এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, দেশের জনগণের নিরাপত্তাকে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্কি জিউন-হাই সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় শুক্রবার সিউলের দক্ষিণে থার্ড আর্মি কর্পস পরিদর্শন করে উত্তর কোরিয়ার উসকানিতে ‘তাৎক্ষণিক উপযুক্ত’ জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার সরকার জানিয়েছে, লাউড স্পিকার বন্ধের কোনো অভিপ্রায়ই তাদের নেই।
সীমান্তের পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান মিন-কু। তবে তিনি দেশের মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন