অসুস্থ চাচির রক্ত লাগবে। রক্ত দিলে বিনিময়ে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে মাহবুবুর রহমান শান্ত ও আবু হাসানকে ঢাকায় নিয়ে আসে কিডনি পাচার চক্রের সদস্যরা।
মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে শান্তকে আন্তর্জাতিক কিডনি দালাল চক্রের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
শনিবার (আগস্ট ২৯) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটকের পর এ তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
আটকরা হলেন- পাচারকারী চক্রের মূলহোতা আব্দুল জলিল, শেখ জাকির ইবনে আজিজ ওরফে শাকির, আশিকুর রহমান ওরফে জেবিন, ফজলে রাব্বি ও জিহান রহমান।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও বাংলা একাডেমি এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় ২টি চেতনানাশক ইনজেকশন, ১টি সিরিঞ্জ ও ১টি ধারালো ছোরা ও একটি তোয়ালে উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, এই চক্রটি অনেকদিন ধরে কিডনি কেনাবেচা করছিল। বিভিন্ন কিডনি রোগীকে টার্গেট করে তাদের কাছে এ সব কিডনি বিক্রি করা হতো। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে কলকাতার একটি হাসপাতালে গিয়ে এসব কিডনি প্রতিস্থাপন করা হতো।
তিনি বলেন, চক্রটি জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার দরিদ্র ও সহজ-সরল মানুষদের থেকে কিডনি অপসারণ করতো।
১০ বছরে চক্রটি চারটি কিডনি বিক্রি করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, শান্ত ও আবু হাসানকে ঢাকায় এনে কিডনি অপসারণের পর তাদের হত্যার করে লাশ বুড়িগঙ্গায় ফেলতে ভিন্ন নামে লঞ্চের একটি সিট বুকিংয়ের পরিকল্পনা ছিল এই চক্রের।
মনিরুল ইসলাম বলেন, কিডনি অপসারণ আইনুযায়ী, অপরাধ। তবে কেউ তার আত্মীয়কে কিডনি দিতে পারেন। এ ঘটনায় রাজধানীর কোনো চিকিৎসক ও ক্লিনিক জড়িত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ডিএমপি মিডিয়ার উপকমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম, ডিবির উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম, মাশরুকুর রহমান ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকী।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন