গত মে মাস থেকে এ পর্যন্ত আলাস্কা উপসাগরের পশ্চিমে ৩০ টি বড় আকারের তিমি মারা গেছে। এই অঞ্চলে তিমি মৃত্যুর এ সংখ্যাকে রীতিমতো অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। এসব তিমি মৃত্যুর কারণ এখনও সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।
জাতীয় সামুদ্রিক ও বায়ুমন্ডলীয় প্রশাসনের (এনওএএ) হিসাব অনুযায়ী, এ অঞ্চলে তিমি মৃত্যুর ঐতিহাসিক গড় বছরে আটটি। আলস্কা উপদ্বীপ ও আলস্কা উপসাগরের পশ্চিমে গত চার মাসে মারা গেছে ৩০টি তিমি। এগুলির মধ্যে ১১টি ফিন তিমি (সরু পৃষ্ঠদেশ), কুঁজো তিমি , একটি ধূসর তিমি ও চারটি অজ্ঞাত প্রজাতির তিমিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে এর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে তারা একে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
যদিও বিজ্ঞানীরা এসব তিমি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনও চিহ্নিত করতে পারেননি, তারপরও তার বেশ কিছু সম্ভাব্য তত্বের বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে প্রধান তত্বটি হচ্ছে- বিষাক্ত শ্যাওলা। এটি তিমির আবাসআস্থলে প্রভাবিত করছে বলে এনওএএর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
এনওএএর সামুদ্রিক স্তন্যপ্রায়ী মৎস ও উপকূল রক্ষা সমন্বয়ক টেরি রোলেস জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল সংলগ্ন আলাস্কা উপসাগরের পশ্চিমে শ্যাওলা হয়তো বিষাক্ত উপাদান সৃষ্টি করছে
তিনি বলেন, ‘আমরা মৃত্যু ও বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতি ও তা সামুদ্রিক খাবারে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়া এবং এ তদন্তে আমরা যা পেয়েছি তা পর্যবেক্ষণ করছি।’
টেরি রোলেস যা বলেছেন তা সম্ভাব্য কারণ। কারণ এনওএএর বিজ্ঞানীরা এখনই কোন সুনির্দিষ্ট কারণের কথা প্রকাশ করছেন না।
তবে এনওএএ কিন্তু এবারই প্রথমবারের মতো ব্যাপক হারে তিমি মৃত্যুর কথা প্রকাশ করছেন। সংস্থাটি এর আগেও সাতশ তিমির মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছিল।
রোয়েলস বলেন, ‘১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রশান্ত মহাসাগরীয় ধূসর তিমির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। আর এটি ঘটেছিল ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এল নিনোর প্রভাবে এবং তা ছড়িয়ে পড়েছিল মেক্সিকো থেকে রাশিয়া পর্যন্ত।’
গবেষকরা অবশ্য ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিমি মৃত্যুর যে ঘটনা ঘটেছিল তার কারণ সম্পর্কে এখনও সুনিশ্চিত নয়। তবে তাদের বিশ্বাস এটা ছিল পরিবেশগত কারণ। কর্মকর্তারা ওই সময় মাত্র দুটি মৃত তিমির ময়নাতদন্ত করতে পেরেছিলেন। এনওএএর মতে এ ধরণের ব্যাপক মৃত্যুর কারণ তদন্ত করা সত্যি কঠিন। এবার এনওএএ তদন্তের জন্য জনগণের সহায়তা চেয়েছে। কোন মৃত তিমি উপকূলে ভেসে এলে তারা যেন দ্রুত আলাস্কা উপকূলীয় সামুদ্রিক স্তন্যপ্রায়ী প্রানী সমন্বয় নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগ সে আহ্বান জানানো হয়েছে।
এক বিবৃতিতে এনওএএ বলেছে, ‘কেবল সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রানী বিশেষজ্ঞকেই সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রানীর অসুস্থতা মোকাবেলার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। বিপর্যস্ত অথবা ভেসে আসা তিমিকে জনগণের স্পর্শ করা উচিৎ নয়।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন