মাটি কাটার সময় শক্ত ধাতব বস্তুর অস্তিত্ব টের পান শ্রমিকেরা। কৌতূহলী হয়ে আরেকটু খুঁড়তেই উঠে এল পিতলের একটি হাঁড়ি। ভেতরে পাওয়া গেল অনেকগুলো মুদ্রা। চোখের সামনে এমন গুপ্তধন দেখে তাঁরা তো বিস্মিত! মুহূর্তে খবর ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই জড়ো হন সেই গুপ্তধন দেখতে।
এই ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গানগর গ্রামে। ওই গ্রামের চৌধুরী বাড়ির মন্দিরের পাশে মাটি খোঁড়ার সময় আজ শনিবার মুদ্রা ভর্তি পিতলের পাতিলটির সন্ধান মেলে।
চৌধুরী বাড়ির কৃষ্ণ রায় চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দাদা দুর্গা চরণ রায় চৌধুরী ছিলেন জমিদার। তাঁদের বাড়িটিও শতাধিক বছরের পুরোনো। বাড়ির ভেতর পারিবারিক মন্দিরটিতে কয়েক বছর আগ থেকে সর্বজনীন দুর্গাপূজা হয়ে আসছে। এ কারণে মন্দিরটি বড় করার জন্য মন্দিরের পাশের খালি জমির মাটি খোঁড়ার কাজ চলছিল।
গঙ্গানগর সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমন সাহা বলেন, সকাল আটটার দিকে মাটির নিচে একটি পাত্রের অস্তিত্ব টের পান শ্রমিকেরা। তাঁরা পাত্রটি ওপরে এনে তার ভেতর রুপার মুদ্রা দেখে চৌধুরী বাড়ির বাসিন্দাদের জানান। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে সরকারি সম্পদ হিসেবে মুদ্রাগুলো থানায় নিয়ে যায়।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজ উদ্দিন ভূইয়া প্রথম আলোকে বলেন, রুপার তৈরি ৪৮৬টি মুদ্রা পাওয়া গেছে। পুলিশ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে মুদ্রাগুলো থানায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। কোনো কোনো মুদ্রার গায়ে ১৮০৪,১৮৪২, ১৮৬২,১৯০৬ ইত্যাদি সাল উল্লেখ করা আছে। মুদ্রাগুলো ওই পরিবারেরই কেউ অনেক বছর আগে মাটির নিচে পুঁতে রেখেছিলেন বলে পুলিশ ধারণা করছে। এখন এগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক ও সরকারি সম্পদ বলে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। আগামীকাল রোববার মুদ্রাগুলো আদালতে পাঠানো হবে এবং আদালতের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রানি ভিক্টোরিয়ার ছবিযুক্ত মুদ্রার সংখ্যাই বেশি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব মুদ্রার এক পিঠে ইংরেজিতে ‘ওয়ান রুপি, ইন্ডিয়া, ১৮৬২’ ও অন্য পিঠে রানি ভিক্টোরিয়ার ছবি দেখা গেছে। এ ছাড়া এক পিঠে ব্রিটিশ সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ডের এর ছবি এবং অন্যপাশে ১৯০৬ লেখা ওয়ান রুপিও এখানে আছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন